(১৯৯২ সালের সংসদে প্রধানমন্ত্রি শাসন চালুর অধিবেশনের রাতে রচিত,
অনেকটা উপরের কবিতার উত্তরের মত)
কাজল লতা তোমার কথা এতোদিনের পরে
ভয়াল ঝড়ের কাঁপন জাগায় আমার শান্ত ঘরে।
আমি তো সেই বেণীমাধব, শান্ত শিষ্ট লোক,
নিজেরে নিয়ে ব্যস্ত থাকি বাইরে যাই হোক।
বাল্য থেকেই মাতাপিতার বাধ্য আমি ছেলে,
বই পড়েছি, বখে যাইনি যখন তখন খেলে।
তখন আমার পরীক্ষা শেষ, তখন আমার ছুটি,
গাঁয়ের সবুজ, মনের সবুজ করলো লুটোপুটি।
কাজল লতা কাজল কালো দীঘির মতো চোখ,
কেমন করে লুকাই বলো, মনের গোপন শোক?
তখন আমি স্বপ্নে বিভোর, মোহন নেশায় চুর,
তখন আমার সত্তা জুড়ে কৃষ্ণ-বাঁশির সুর।
সেসব কিছু সত্য ছিল, সত্য ছিল কথা,
এখনও তো মুচড়ে ওঠে প্রাণের দারুন ব্যথা।
অথচ এও সত্য এ যে, ঘোরের থেকে নামি’
চোরের মত পালিয়ে এলাম তোমায় ফেলে আমি।
কাজল লতা তোমার বাবা দোকানে কাজ করে,
এ কথাটাই ভেবে তখন লজ্জাতে যাই ম’রে।
ঘোর ছাড়িয়ে, গ্রাম ছাড়িয়ে, পালাই নিজের কোণে,
তোমার কথা, কাজল লতা, আর কে বলো শোনে?
শহরে যে অনেক আলো, অনেক ভালো মেয়ে,
ধন্য হই যে, গণ্য হই যে, তাদের পিছু ধেয়ে।
আমার আছে অনেক আশা, আমার আছে সিঁড়ি
গাছ-গাছালি, পাখ-পাখালি, তোমার শুধু পিঁড়ি।
আমি এখন প্রতিষ্ঠিত, আমি এখন বড়ো
আমায় দেখে ছোটরা সব ভয়েই জড়োসড়ো।
আমি এখন আহার শেষে, ঘুমাই যুগল সুখে
তোমার কথা ভুলেও আমি, আনি নাকো মুখে।
কাজল লতা কাজল লতা, তোমার দৃঢ় হাতে,
সুষু্প্তদের জাগাও তুলে তী্ব্র কষাঘাতে।।
No comments:
Post a Comment